রিজিক বৃদ্ধির আমল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৩৭:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৪ ৪৩ বার পড়া হয়েছে

রিজিক বৃদ্ধির আমল

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রিজিক বৃদ্ধির আমল গুলো আমাদের সবারই পালন করা উচিত। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের রিজিকদাতা। যখনই আমাদের রিজিকের প্রয়োজন হয়, তিনি আমাদের রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন। দোয়া এবং আমলের মাধ্যমে এই রিজিক বৃদ্ধি করা যায়। মহান আল্লাহ তায়ালা বান্দাদেরকে এমন সকল মাধ্যম থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন যেটি বান্দা কখনো কল্পনাই করেননি।

রিজিক বৃদ্ধির আমল ও দোয়া:

নিয়মিত সালাত আদায় করা

যথাসময়ে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করলে মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের জন্য রিজিকের দ্বার উন্মুক্ত করে দেন। নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি রিজিকের দায়িত্ব আল্লাহ তায়ালা নেন। পবিত্র কুরআনে এ ব্যাপারে এরশাদ করেছেন, আর আপনি এবং আপনার পরিবার পরিজনকে সালাত আদায় করার জন্য আদেশ দিন এবং নিজেও সেই সালাত আদায়ের উপরে অটল থাকুন। আমি আপনার কাছ থেকে কোন রিজিক চাই না বরং আমি আপনাকে রিজিক দেই। মুত্তাকীদের জন্যই শুভ পরিনাম। (সূরা ত্বহা, আয়াত: ১৩২)

তওবা পাঠ করা

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা নানা কারণেই পাপ এবং গুনাহ করে থাকি। সেজন্য আমাদের উচিত সবসময় তওবা এবং ইস্তেগফার পাঠ করা। রিজিক বৃদ্ধির আমল গুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তওবা এবং ইস্তেগফার পাঠ করা।

এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেছেন, আমি তাদেরকে বলেছি নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা এবং অনুগ্রহ প্রার্থনা করো। নিশ্চয় তিনি অতি সহজে দয়ালু এবং ক্ষমাশীল। তোমাদের জন্য তিনি আকাশ থেকে অনেক বৃষ্টি প্রদান করবেন এবং তোমাদের ধন সম্পদ সন্তানদের ক্ষেত্রে উন্নতি প্রদান করবেন সেই সাথে তোমাদের বাগান এবং নদ নদী দান করবেন। (সূরা নূহ, আয়াত: ১০-১২)

মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি শুকরিয়া আদায় করা

আমাদের জীবনের প্রতিটি অংশেই রয়েছে মহান আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ এবং দয়া। এত সকল গুনাহের কাজে লিপ্ত থাকা সত্ত্বেও তিনি আমাদেরকে রিজিক দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন। প্রতিটি কাজের জন্যই মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি শুকরিয়া আদায় করা উচিত। নিয়মিত শুকরিয়া আদায় রিজিক বৃদ্ধি পায়। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে নিজে এ ব্যাপারে ঘোষণা দিয়েছেন যে আমরা যদি শোকর আদায় করি তাহলে অবশ্যই তিনি আমাদের নেয়ামত বাড়িয়ে দিবেন। আর যদি আমরা অকৃতজ্ঞ হই তাহলে আমাদের জন্য রয়েছে কঠিন আজাব। এই ঘোষণাটি রয়েছে পবিত্র কুরআনের সূরা ইব্রাহীম, আয়াত ৭।

জীবিকার জন্য পরিশ্রম করা

মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে নামাজ শেষ করে জীবিকার জন্য জমিনে ছড়িয়ে পড়তে বলেছেন। মহান আল্লাহতালা ইবাদত শেষে আমরা যত বেশি জীবিকার সন্ধানে পরিশ্রম করব আমাদের রিজিক তত পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও মানুষের কাছ থেকে হাত পেয়ে চাওয়া কিংবা অনুগ্রহ প্রার্থনা করার একদমই উচিত নয়।

তাই রিজিক বৃদ্ধির আমল গুলির মধ্যেও অন্যতম একটি কাজ হচ্ছে জীবিকার জন্য পরিশ্রম করা এবং সন্ধান করা।

রিজিক বৃদ্ধির আমল

আত্মীয়তার সাথে সম্পর্ক

আমরা অনেকেই বিভিন্ন কারণ এবং রাগ বশত আত্মীয়তার সম্পর্ক গুলি ছিন্ন করি। কিন্তু এতে করে আমাদের রিজিক এবং আয় উপার্জনে বরকত কমে যায়। তাই তুচ্ছ কোনো কারণে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন না। ক্ষমা করতে শিখুন।

আত্মীয়দের সাথে ভালো আচরণ এবং তাদের হক গুলো যথাযথভাবে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন মহান আল্লাহ তায়ালা।

হজ্ব এবং ওমরা পালন করা

বারবার হজ্ব এবং ওমরা পালন করলে আয় উপার্জনে বরকত কমে যায় এবং রিজিক বৃদ্ধি পায়। এ ব্যাপারে আমাদের প্রিয়নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা নিয়মিত হজ্ব এবং ওমরা পালন করা। এতে করে অভাব এবং গুনাহ এমনভাবে দূরীভূত হয় যেমন করে কামার হাতুড়ির দিয়ে লোহা এবং রুপার ময়লা গুলি দূর করে। (তিরমিজি, হাদিস: ৮১০)

জিহাদে অংশ নেওয়া এবং হিজরত করা

রিজিক বৃদ্ধির আমল গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মহান আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় হিজরত করা এবং জিহাদে অংশগ্রহণ করা। এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে বলা আছে, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় হিজরত করবে: জমিনের বহু আশ্রয়স্থলে সে সচ্ছলতা অর্জন করবে। (সূরা নিসা, আয়াত:১০)

বেশি বেশি দান সদগা প্রদান করা

আমরা অনেকেই নিজের অর্জিত অর্থ এবং উপার্জন থেকে দান কিংবা সদগা করতে চাই না। আমাদের মনে ভয় থাকে এতে করে হয়তো আমাদের অর্থ সম্পত্তি কমে যেতে পারে।। কিন্তু যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ পাবার আশায় বেশি বেশি দান সদগা করে তার রিজিক এবং অর্থ উপার্জনের বরকত আল্লাহ বাড়িয়ে দেন।

বিয়ে করা

শুনতে অনেকটা অপ্রাসঙ্গিক মনে হলেও বিয়ের মাধ্যমে বান্দার রিজিক বৃদ্ধি পায়। এ ব্যাপারে হাদিসে আমাদের প্রিয় নবী রাসূল সাঃ বলেছেন, তিন শ্রেণীর ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ তায়ালা নিজে সাহায্য করার দায়িত্ব নিয়েছেন। যাদের মধ্যেও এক শ্রেণীর লোক হচ্ছে যারা বিয়ে করতে আগ্রহী সেই ব্যক্তি এবং বিয়ে করে পবিত্র জীবন যাপনে করতে ইচ্ছুক। (তিরমিজি, হাদিস: ১,৬৫৫)

আশা করি আপনারা রিজিক বৃদ্ধির আমল গুলির সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। আপনি নিজেই এ সকল আমল গুলি পালন করুন এবং অন্যদেরকে পালন করার জন্য উৎসাহিত করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

রিজিক বৃদ্ধির আমল

আপডেট সময় : ০২:৩৭:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৪

রিজিক বৃদ্ধির আমল গুলো আমাদের সবারই পালন করা উচিত। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের রিজিকদাতা। যখনই আমাদের রিজিকের প্রয়োজন হয়, তিনি আমাদের রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন। দোয়া এবং আমলের মাধ্যমে এই রিজিক বৃদ্ধি করা যায়। মহান আল্লাহ তায়ালা বান্দাদেরকে এমন সকল মাধ্যম থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন যেটি বান্দা কখনো কল্পনাই করেননি।

রিজিক বৃদ্ধির আমল ও দোয়া:

নিয়মিত সালাত আদায় করা

যথাসময়ে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করলে মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের জন্য রিজিকের দ্বার উন্মুক্ত করে দেন। নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি রিজিকের দায়িত্ব আল্লাহ তায়ালা নেন। পবিত্র কুরআনে এ ব্যাপারে এরশাদ করেছেন, আর আপনি এবং আপনার পরিবার পরিজনকে সালাত আদায় করার জন্য আদেশ দিন এবং নিজেও সেই সালাত আদায়ের উপরে অটল থাকুন। আমি আপনার কাছ থেকে কোন রিজিক চাই না বরং আমি আপনাকে রিজিক দেই। মুত্তাকীদের জন্যই শুভ পরিনাম। (সূরা ত্বহা, আয়াত: ১৩২)

তওবা পাঠ করা

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা নানা কারণেই পাপ এবং গুনাহ করে থাকি। সেজন্য আমাদের উচিত সবসময় তওবা এবং ইস্তেগফার পাঠ করা। রিজিক বৃদ্ধির আমল গুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তওবা এবং ইস্তেগফার পাঠ করা।

এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেছেন, আমি তাদেরকে বলেছি নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা এবং অনুগ্রহ প্রার্থনা করো। নিশ্চয় তিনি অতি সহজে দয়ালু এবং ক্ষমাশীল। তোমাদের জন্য তিনি আকাশ থেকে অনেক বৃষ্টি প্রদান করবেন এবং তোমাদের ধন সম্পদ সন্তানদের ক্ষেত্রে উন্নতি প্রদান করবেন সেই সাথে তোমাদের বাগান এবং নদ নদী দান করবেন। (সূরা নূহ, আয়াত: ১০-১২)

মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি শুকরিয়া আদায় করা

আমাদের জীবনের প্রতিটি অংশেই রয়েছে মহান আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ এবং দয়া। এত সকল গুনাহের কাজে লিপ্ত থাকা সত্ত্বেও তিনি আমাদেরকে রিজিক দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন। প্রতিটি কাজের জন্যই মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি শুকরিয়া আদায় করা উচিত। নিয়মিত শুকরিয়া আদায় রিজিক বৃদ্ধি পায়। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে নিজে এ ব্যাপারে ঘোষণা দিয়েছেন যে আমরা যদি শোকর আদায় করি তাহলে অবশ্যই তিনি আমাদের নেয়ামত বাড়িয়ে দিবেন। আর যদি আমরা অকৃতজ্ঞ হই তাহলে আমাদের জন্য রয়েছে কঠিন আজাব। এই ঘোষণাটি রয়েছে পবিত্র কুরআনের সূরা ইব্রাহীম, আয়াত ৭।

জীবিকার জন্য পরিশ্রম করা

মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে নামাজ শেষ করে জীবিকার জন্য জমিনে ছড়িয়ে পড়তে বলেছেন। মহান আল্লাহতালা ইবাদত শেষে আমরা যত বেশি জীবিকার সন্ধানে পরিশ্রম করব আমাদের রিজিক তত পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও মানুষের কাছ থেকে হাত পেয়ে চাওয়া কিংবা অনুগ্রহ প্রার্থনা করার একদমই উচিত নয়।

তাই রিজিক বৃদ্ধির আমল গুলির মধ্যেও অন্যতম একটি কাজ হচ্ছে জীবিকার জন্য পরিশ্রম করা এবং সন্ধান করা।

রিজিক বৃদ্ধির আমল

আত্মীয়তার সাথে সম্পর্ক

আমরা অনেকেই বিভিন্ন কারণ এবং রাগ বশত আত্মীয়তার সম্পর্ক গুলি ছিন্ন করি। কিন্তু এতে করে আমাদের রিজিক এবং আয় উপার্জনে বরকত কমে যায়। তাই তুচ্ছ কোনো কারণে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন না। ক্ষমা করতে শিখুন।

আত্মীয়দের সাথে ভালো আচরণ এবং তাদের হক গুলো যথাযথভাবে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন মহান আল্লাহ তায়ালা।

হজ্ব এবং ওমরা পালন করা

বারবার হজ্ব এবং ওমরা পালন করলে আয় উপার্জনে বরকত কমে যায় এবং রিজিক বৃদ্ধি পায়। এ ব্যাপারে আমাদের প্রিয়নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা নিয়মিত হজ্ব এবং ওমরা পালন করা। এতে করে অভাব এবং গুনাহ এমনভাবে দূরীভূত হয় যেমন করে কামার হাতুড়ির দিয়ে লোহা এবং রুপার ময়লা গুলি দূর করে। (তিরমিজি, হাদিস: ৮১০)

জিহাদে অংশ নেওয়া এবং হিজরত করা

রিজিক বৃদ্ধির আমল গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মহান আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় হিজরত করা এবং জিহাদে অংশগ্রহণ করা। এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে বলা আছে, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় হিজরত করবে: জমিনের বহু আশ্রয়স্থলে সে সচ্ছলতা অর্জন করবে। (সূরা নিসা, আয়াত:১০)

বেশি বেশি দান সদগা প্রদান করা

আমরা অনেকেই নিজের অর্জিত অর্থ এবং উপার্জন থেকে দান কিংবা সদগা করতে চাই না। আমাদের মনে ভয় থাকে এতে করে হয়তো আমাদের অর্থ সম্পত্তি কমে যেতে পারে।। কিন্তু যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ পাবার আশায় বেশি বেশি দান সদগা করে তার রিজিক এবং অর্থ উপার্জনের বরকত আল্লাহ বাড়িয়ে দেন।

বিয়ে করা

শুনতে অনেকটা অপ্রাসঙ্গিক মনে হলেও বিয়ের মাধ্যমে বান্দার রিজিক বৃদ্ধি পায়। এ ব্যাপারে হাদিসে আমাদের প্রিয় নবী রাসূল সাঃ বলেছেন, তিন শ্রেণীর ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ তায়ালা নিজে সাহায্য করার দায়িত্ব নিয়েছেন। যাদের মধ্যেও এক শ্রেণীর লোক হচ্ছে যারা বিয়ে করতে আগ্রহী সেই ব্যক্তি এবং বিয়ে করে পবিত্র জীবন যাপনে করতে ইচ্ছুক। (তিরমিজি, হাদিস: ১,৬৫৫)

আশা করি আপনারা রিজিক বৃদ্ধির আমল গুলির সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। আপনি নিজেই এ সকল আমল গুলি পালন করুন এবং অন্যদেরকে পালন করার জন্য উৎসাহিত করুন।