ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:১৮:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অগাস্ট ২০২৪ ৪০ বার পড়া হয়েছে

ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছরে নামিয়ে আনার জন্য প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে পার্লামেন্টে। ইতিমধ্যে এ সংবাদের কারণে দেশ জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে আলোচনা এবং সমালোচনা। ইরাকের জাস্টিস মন্ত্রণালয় থেকে এই প্রস্তাবটি দেয়া হয়।

এনডিটিভির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছর। দেশটিতে বিদ্যামান আইনে বর্তমানে এই বয়সটি প্রচলিত আছে। দেশটি নতুন একটি বিলে উত্থাপিত করা হয়েছে, পারিবারিক কোনো বিষয়ে একমাত্র ধর্মীয় নেতা এবং বেসামরিক বিচারের সাথে জড়িতরাই নাক গলাতে পারবে।

উক্ত বিলে ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ এবং ছেলেদের বিয়ের নূন্যতম বয়স ১৫ বছর করার দাবি উত্থাপিত করা হয়েছে। দেশটির সমালোচকদের দাবি, বিয়ের এই বয়সের বিলটি পাশ হলে ডিভোর্স এবং বিবাহ পরবর্তী সমস্যা গুলো অনেকাংশে বেড়ে যাবে। সেই সাথে নারী এবং পুরুষদের মধ্যকার লিঙ্গ বৈষম্য বৃদ্ধি পাবে নারীরা তাদের সংরক্ষিত অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।

ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর করার প্রতিবাদে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং সুশীল সমাজের লোকেরা তীব্র বিরোধিতা করছে। তারা দাবি করছে ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর হলে লেখাপড়া এবং স্বাস্থ্যগত দিক থেকে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া অল্প বয়সে গর্ভধারণ করলে নানা রকম শারীরিক জটিলতা এবং পারিবারিক অশান্তি দেখা দেয়।

ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর

ইউনিসেফ জানিয়েছে, ইরাকের প্রায় ২৮% নারীদের বিয়ে ১৮ বছর হওয়ার আগেই সম্পন্ন হয়। এর মধ্যেও নতুন আইন পাশ হলে নারীরা আরও বেশি পিছিয়ে পড়বে।

গত মাসের শেষ দিকে ইরাকের পার্লামেন্টে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর করার ব্যাপারে প্রস্তাব দেওয়া হলে আইনপ্রনেতাদের তোপের মুখে সেটি বাতিল করা হয়। কিন্তু আগস্ট মাসের ৪ তারিখে শিয়া সম্প্রদায়ের সমর্থন দিলে উক্ত বিলটি আবারও পার্লামেন্টে উপস্থাপন করা হয়।

দেশটির আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জানা যায়, ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর করার প্রস্তাবটি ইসলামিক আইনকে মানদন্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। সেই সাথে মেয়েদেরকে যে কোন রকমের অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানো থেকে রক্ষা করে। তবে মানবাধিকার কর্মীদের দাবি এটিই একেবারেই একটি ভিত্তিহীন যুক্তি এবং এই বিল পাস হলে বাল্যবিবাহের মতো সমস্যা গুলো আরো গুরুত্ব হয়ে যাবে।

ইউনিসেফের দাবি অনুযায়ী, সমাজের ধর্মীয় নেতাদের বিয়ের ব্যাপারে কর্তৃত্ব দেওয়া হলে সেটি সমতাভিত্তিক আইন অনুযায়ী অবৈধ হবে। ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর করা হলে তাদের ভবিষ্যৎ তাদের কেড়ে নেওয়া হবে। মেয়েরা শুধুমাত্র বিয়ের সাজে নয় বরং খেলার মাঠে স্কুলে থাকার এবং বিভিন্ন কাজকর্মেও অংশগ্রহণ করার দাবি রাখে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর

আপডেট সময় : ১১:১৮:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অগাস্ট ২০২৪

ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছরে নামিয়ে আনার জন্য প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে পার্লামেন্টে। ইতিমধ্যে এ সংবাদের কারণে দেশ জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে আলোচনা এবং সমালোচনা। ইরাকের জাস্টিস মন্ত্রণালয় থেকে এই প্রস্তাবটি দেয়া হয়।

এনডিটিভির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছর। দেশটিতে বিদ্যামান আইনে বর্তমানে এই বয়সটি প্রচলিত আছে। দেশটি নতুন একটি বিলে উত্থাপিত করা হয়েছে, পারিবারিক কোনো বিষয়ে একমাত্র ধর্মীয় নেতা এবং বেসামরিক বিচারের সাথে জড়িতরাই নাক গলাতে পারবে।

উক্ত বিলে ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ এবং ছেলেদের বিয়ের নূন্যতম বয়স ১৫ বছর করার দাবি উত্থাপিত করা হয়েছে। দেশটির সমালোচকদের দাবি, বিয়ের এই বয়সের বিলটি পাশ হলে ডিভোর্স এবং বিবাহ পরবর্তী সমস্যা গুলো অনেকাংশে বেড়ে যাবে। সেই সাথে নারী এবং পুরুষদের মধ্যকার লিঙ্গ বৈষম্য বৃদ্ধি পাবে নারীরা তাদের সংরক্ষিত অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।

ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর করার প্রতিবাদে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং সুশীল সমাজের লোকেরা তীব্র বিরোধিতা করছে। তারা দাবি করছে ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর হলে লেখাপড়া এবং স্বাস্থ্যগত দিক থেকে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া অল্প বয়সে গর্ভধারণ করলে নানা রকম শারীরিক জটিলতা এবং পারিবারিক অশান্তি দেখা দেয়।

ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর

ইউনিসেফ জানিয়েছে, ইরাকের প্রায় ২৮% নারীদের বিয়ে ১৮ বছর হওয়ার আগেই সম্পন্ন হয়। এর মধ্যেও নতুন আইন পাশ হলে নারীরা আরও বেশি পিছিয়ে পড়বে।

গত মাসের শেষ দিকে ইরাকের পার্লামেন্টে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর করার ব্যাপারে প্রস্তাব দেওয়া হলে আইনপ্রনেতাদের তোপের মুখে সেটি বাতিল করা হয়। কিন্তু আগস্ট মাসের ৪ তারিখে শিয়া সম্প্রদায়ের সমর্থন দিলে উক্ত বিলটি আবারও পার্লামেন্টে উপস্থাপন করা হয়।

দেশটির আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জানা যায়, ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর করার প্রস্তাবটি ইসলামিক আইনকে মানদন্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। সেই সাথে মেয়েদেরকে যে কোন রকমের অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানো থেকে রক্ষা করে। তবে মানবাধিকার কর্মীদের দাবি এটিই একেবারেই একটি ভিত্তিহীন যুক্তি এবং এই বিল পাস হলে বাল্যবিবাহের মতো সমস্যা গুলো আরো গুরুত্ব হয়ে যাবে।

ইউনিসেফের দাবি অনুযায়ী, সমাজের ধর্মীয় নেতাদের বিয়ের ব্যাপারে কর্তৃত্ব দেওয়া হলে সেটি সমতাভিত্তিক আইন অনুযায়ী অবৈধ হবে। ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর করা হলে তাদের ভবিষ্যৎ তাদের কেড়ে নেওয়া হবে। মেয়েরা শুধুমাত্র বিয়ের সাজে নয় বরং খেলার মাঠে স্কুলে থাকার এবং বিভিন্ন কাজকর্মেও অংশগ্রহণ করার দাবি রাখে।